গণ অভ্যুত্থানের পর জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক ভণ্ডামি
২০১৪ সালের পর থেকে যারা একটা পাবলিক প্রোগ্রাম দেওয়ার সাহস পায় নাই, গত ১০ বছরে হাসিনার আমলে যাদের ব্যবসা বাণিজ্য সব ঠিকঠাক ছিল, যারা জুলাই-আগস্টে নিজ দলের প্রায় ১০০ শহীদের তালিকা দিতে পারেনাই, যারা মসজিদে বসে পবিত্র ধর্মের নাম ভাঙিয়ে রাজনীতি করতে চায়, হাসিনার আমলে যারা নিজ দলের নামে প্রকাশ্যে রাজনীতি করার সাহস পায় নাই, এমনকি গত ৫ আগস্টের পরও যাদের একটা বড় কোন কর্মসূচি দেখা যায় নাই। এরাই দাবি করে যে তারা নাকি গণ অভ্যুত্থানে প্রথম সারিতে ছিল! হ্যাঁ!
এদের নেতাকর্মী কয়জন আছে সারাদেশে? সব কি পলাতক নাকি ফেসবুকে বট বাহিনী হিসেবে মানুষের ব্রেইন ওয়াশ করছে?
গণ অভ্যুত্থানে তাদের যে ভুমিকা ছিল তা নিয়ে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। কিন্তু গণ অভ্যুত্থানে সবচেয়ে বড় ভুমিকা যে দলের, সবচেয়ে বেশি শহীদ হয়েছে যে দলের নেতাকর্মীরা (বিএনপি), তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে এরা যদি দ্বিতীয়বার চিন্তা না করে তাহলে তারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন কিভাবে দেখবে?
এদের ভুল ধরতে গেলে আপনি শেষ খুঁজে পাবেন না। ১৯৪৭ থেকে ২০২৪ পুরোটাই এদের ভুলেই কেটেছে। কিন্তু রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রকাশ্যে আসার সাহস যাদের নাই, তারা যদি নিজেদের বড় দল আর জাতির একমাত্র বীর দাবি করে বসে আর আপনি যদি তাদেরকে স্বাধীনতায় ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন করেন তাহলে সঠিক উত্তর তো পাবেনই না বরং দেখবেন তাদের মন আর চিন্তা ভাবনা পাছার মত দ্বিখন্ডিত হয়ে গেছে।
এরা যে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে কোন কোন জায়গায় আপস করে চলতো সেটা তো আমরা জানি, তাই না?
পাঞ্জাবি-টুপি পরা মানেই যে জামাত-শিবির, সেটা তো হাসিনা আর আওয়ামী বয়ান ছিল। জুলাই-আগস্টে যারা পাঞ্জাবি-টুপি পরে রাস্তায় নেমেছিল, তারা কেউ জামাতের রাজনীতির সাথে জড়িত না। যাত্রাবাড়ি, চট্রগ্রাম আর রাজশাহীতে যারা যুদ্ধ করেছে, এরা সবাই মাদ্রাসার শিক্ষক শিক্ষার্থী।
তরমুজের ১০০ টা বিচির মধ্যে কোন বিচিটা জামাত-শিবির করে সেটা যদি আপনি না বুঝেন, তাহলে আপনারও রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ খুব একটা ভালো না।
আরেকটা বিষয়, যুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়া আর ময়দানে থেকে যুদ্ধ করা এক বিষয় না। যারা ময়দানে যুদ্ধ করে তারাই সবচাইতে বড় বীর। ২০২৪ এ নেতৃত্ব দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (আগস্টের পূর্বে যারা সাধারণ শিক্ষার্থী ছিলেন), কিন্তু যুদ্ধ সফল করেছে সর্বস্তরের জনগণ।