বাবা-মা, সন্তান এবং সমাজ | আশা-আকাঙ্খা এবং স্বপ্ন | জীবনের সঠিক সিদ্ধান্ত এবং পদক্ষেপ
কিছুদিন আগে আমার এক স্যার এক ক্লাসে বলছিলো যে সে রিসার্চ করে পেয়েছে, "যেসব মানুষের বাবা-মা ছোটবেলায় মারা যায়, তারা অনেক সফল হয়। কারণ, ছোটবেলা থেকেই তারা খুব ভালো করে এবং তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতে পারে। Decision Making এ ওরা সবচেয়ে ভালো হয়। কারন তাদেরকে বোঝানোর মত কেউ থাকে না।"
এসব কথা শুনে ঠিক ওই ক্লাসের এক ঘন্টা পরই আমি উনার অফিসে গিয়ে সবার সামনে উনাকে বলে আসছিলাম, "মাফ করবেন স্যার কিন্তু পরবর্তীতে এরকম ধরণের কোন লেকচার দিতে যদি শুনি কোন ছাত্রছাত্রীর কাছ থেকে তাহলে শুধু আমিই না, আমরা যারা ছিলাম ক্লাসে সবাই আপনার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।"
কিন্তু আজকে আমার এক বন্ধুর জীবনের কাহিনী শোনার পর মনে হচ্ছে ওই কথাগুলো আমার ওই স্যারকে না, বরং পৃথিবীর কিছু বাবা-মা কে বলে আসা দরকার ছিল। অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানদের লেখাপড়া করিয়ে বড় করে তাদের সন্তানদের জন্য না, সমাজের জন্য। বাংলাদেশে বিশেষ করে বেশীরভাগ পিতা-মাতাই এসব বিষয়গুলো হয়তো খেয়ালই করে না। আমরা সবাই জানি যে, কোন পিতা-মাতাই তাঁদের কোন সন্তানেরই খারাপ চান না। কিন্তু মনের অজান্তেই অনেক পিতা-মাতা যে কয়েকবার অনেক সন্তানকে জীবিত অবস্থায়ই মেরে ফেলে তা হয়তো উনারা নিজেরাও টের পান না।
এখানেই শেষ নয়, আপনি চাইলে গবেষণা করে দেখতে পারেন যে বাংলাদেশে যত আত্মহত্যা হয় ছাত্রছাত্রীদের মাঝে তার শতকরা ৮০ ভাগের পিছনেই এদের বাবা-মাই দায়ী। হ্যাঁ অপ্রিয় হলেও এটাই সত্যি। আর আত্মহত্যার দিক থেকে এখনও বাংলাদেশ বিশ্বের প্রথম সারির কয়েকটি দেশের মধ্যে অবস্থান করছে।
ছেলে-মেয়ের আশা, আকাঙ্খা, স্বপ্ন এগুলোর দিকে আমাদের অধিকাংশ পিতা-মাতাই লক্ষ্যই করেন না। ছোট বেলা থেকেই উনারা বাছাই করে রাখেন যে কোন সন্তানকে কী বানাবে। সবকিছুতেই এরা সন্তানের দোষ খুঁজে, সন্তানকে খোলাখুলিভাবে কিছু বলারও সুযোগ দেন না এরা। উনারা পারলে এই দোষটাও ওদের দিয়ে দিতো যে "কেন জন্ম নিয়েছো পৃথিবীতে?" কিন্তু এটা বলার কোন সুযোগ তাঁদের জন্য উপরওয়ালা রাখেন নি। কারণ এটা বললে দোষটা তাঁদের নিজেদের উপরই পড়বে।
আমার মনে হয় এসব কিছু বিষয়ে প্রত্যেকটা মানুষের সচেতন হওয়া উচিত। যদি বাবা-মা তাঁদের সন্তানদের কোন ব্যাপারে কথা বলার সুযোগই না দেয়, নিজ পক্ষ থেকে কোন সিদ্ধান্ত নিতে না দেয়, ছেলে-মেয়েদের মনের অবস্থাই বুঝতে না পারে তাহলে বাবা-মা হওয়ার সার্থকতাটা কোন জায়গায় একটু চিন্তা করে দেখবেন। জন্ম তো যে কেউই দিতে পারে। মৃত্যুর আগে কয়জন নিজের মনকে বলে যেতে পারে যে, "হ্যাঁ আমি একজন সফল বাবা বা সফল মা।"
এই পোস্টে আমি শুধু মানুষ হত্যা মানে 'আত্মহত্যা' এর উদাহরণ দিলাম। যদি স্বপ্ন হত্যার কথা বলতে যাই বা উদাহরণ দিতে যাই তাহলে আমি নিজেও জানি যে আমি এগুলো বলে শেষ করতে পারবো না।
তাই প্রত্যেকটি বাবা-মা কেই আমি অনুরোধ করবো যে আরেকটু ফ্রি হোন সন্তানের সাথে, বুঝার চেষ্টা করুন যে তারা কী চায়, কী করতে চায়, কী হতে চায়। সমাজের চোখে নিজেকে ভালো দেখানোর জন্য না, সন্তানের চোখে নিজেকে ভালো করার জন্য পদক্ষেপ বা সিদ্ধান্ত নিন। তাহলে আপনা-আপনিই সমাজের চোখেও আপনি ভালো হয়ে উঠবেন।
বিশ্বাস করুন যেই সমাজের জন্য আপনি আপনার ছেলে-মেয়েদের জীবন বদলে দিচ্ছেন নিজেদের মনমতো, সেই সমাজ মৃত্যুশয্যায় আপনার সাথে থাকবে না। থাকবে আপনার ওই জীবন বদলে দেওয়া সন্তানগুলোই। কোন অসুখ-বিসুখে ওরাই আসবে আপনাকে সাহায্য করতে। আপনি ওদেরকে যদি অনেক ধন-সম্পদের অধিকারী বানাতে পারেন তাহলে পরবর্তীতে বার্ধক্যকালীন অবস্থায় সেগুলোর প্রভাব আপনাদের উপরই পড়বে।
এমনভাবে এদের গড়ে তুলুন যেন এরা একসময় মন থেকে বলতে পারে যে, "এই পৃথিবীতে জন্ম দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ তোমাদের মা-বাবা।" আল্লাহ্ এর পরই যেন এরা বাবা-মা কে মন থেকে ধন্যবাদ জানাতে পারে এই দুনিয়াতে আসতে পেরে।
- আজহারুল ইসলাম অর্থী
এসব কথা শুনে ঠিক ওই ক্লাসের এক ঘন্টা পরই আমি উনার অফিসে গিয়ে সবার সামনে উনাকে বলে আসছিলাম, "মাফ করবেন স্যার কিন্তু পরবর্তীতে এরকম ধরণের কোন লেকচার দিতে যদি শুনি কোন ছাত্রছাত্রীর কাছ থেকে তাহলে শুধু আমিই না, আমরা যারা ছিলাম ক্লাসে সবাই আপনার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।"
কিন্তু আজকে আমার এক বন্ধুর জীবনের কাহিনী শোনার পর মনে হচ্ছে ওই কথাগুলো আমার ওই স্যারকে না, বরং পৃথিবীর কিছু বাবা-মা কে বলে আসা দরকার ছিল। অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানদের লেখাপড়া করিয়ে বড় করে তাদের সন্তানদের জন্য না, সমাজের জন্য। বাংলাদেশে বিশেষ করে বেশীরভাগ পিতা-মাতাই এসব বিষয়গুলো হয়তো খেয়ালই করে না। আমরা সবাই জানি যে, কোন পিতা-মাতাই তাঁদের কোন সন্তানেরই খারাপ চান না। কিন্তু মনের অজান্তেই অনেক পিতা-মাতা যে কয়েকবার অনেক সন্তানকে জীবিত অবস্থায়ই মেরে ফেলে তা হয়তো উনারা নিজেরাও টের পান না।
এখানেই শেষ নয়, আপনি চাইলে গবেষণা করে দেখতে পারেন যে বাংলাদেশে যত আত্মহত্যা হয় ছাত্রছাত্রীদের মাঝে তার শতকরা ৮০ ভাগের পিছনেই এদের বাবা-মাই দায়ী। হ্যাঁ অপ্রিয় হলেও এটাই সত্যি। আর আত্মহত্যার দিক থেকে এখনও বাংলাদেশ বিশ্বের প্রথম সারির কয়েকটি দেশের মধ্যে অবস্থান করছে।
ছেলে-মেয়ের আশা, আকাঙ্খা, স্বপ্ন এগুলোর দিকে আমাদের অধিকাংশ পিতা-মাতাই লক্ষ্যই করেন না। ছোট বেলা থেকেই উনারা বাছাই করে রাখেন যে কোন সন্তানকে কী বানাবে। সবকিছুতেই এরা সন্তানের দোষ খুঁজে, সন্তানকে খোলাখুলিভাবে কিছু বলারও সুযোগ দেন না এরা। উনারা পারলে এই দোষটাও ওদের দিয়ে দিতো যে "কেন জন্ম নিয়েছো পৃথিবীতে?" কিন্তু এটা বলার কোন সুযোগ তাঁদের জন্য উপরওয়ালা রাখেন নি। কারণ এটা বললে দোষটা তাঁদের নিজেদের উপরই পড়বে।
আমার মনে হয় এসব কিছু বিষয়ে প্রত্যেকটা মানুষের সচেতন হওয়া উচিত। যদি বাবা-মা তাঁদের সন্তানদের কোন ব্যাপারে কথা বলার সুযোগই না দেয়, নিজ পক্ষ থেকে কোন সিদ্ধান্ত নিতে না দেয়, ছেলে-মেয়েদের মনের অবস্থাই বুঝতে না পারে তাহলে বাবা-মা হওয়ার সার্থকতাটা কোন জায়গায় একটু চিন্তা করে দেখবেন। জন্ম তো যে কেউই দিতে পারে। মৃত্যুর আগে কয়জন নিজের মনকে বলে যেতে পারে যে, "হ্যাঁ আমি একজন সফল বাবা বা সফল মা।"
এই পোস্টে আমি শুধু মানুষ হত্যা মানে 'আত্মহত্যা' এর উদাহরণ দিলাম। যদি স্বপ্ন হত্যার কথা বলতে যাই বা উদাহরণ দিতে যাই তাহলে আমি নিজেও জানি যে আমি এগুলো বলে শেষ করতে পারবো না।
তাই প্রত্যেকটি বাবা-মা কেই আমি অনুরোধ করবো যে আরেকটু ফ্রি হোন সন্তানের সাথে, বুঝার চেষ্টা করুন যে তারা কী চায়, কী করতে চায়, কী হতে চায়। সমাজের চোখে নিজেকে ভালো দেখানোর জন্য না, সন্তানের চোখে নিজেকে ভালো করার জন্য পদক্ষেপ বা সিদ্ধান্ত নিন। তাহলে আপনা-আপনিই সমাজের চোখেও আপনি ভালো হয়ে উঠবেন।
বিশ্বাস করুন যেই সমাজের জন্য আপনি আপনার ছেলে-মেয়েদের জীবন বদলে দিচ্ছেন নিজেদের মনমতো, সেই সমাজ মৃত্যুশয্যায় আপনার সাথে থাকবে না। থাকবে আপনার ওই জীবন বদলে দেওয়া সন্তানগুলোই। কোন অসুখ-বিসুখে ওরাই আসবে আপনাকে সাহায্য করতে। আপনি ওদেরকে যদি অনেক ধন-সম্পদের অধিকারী বানাতে পারেন তাহলে পরবর্তীতে বার্ধক্যকালীন অবস্থায় সেগুলোর প্রভাব আপনাদের উপরই পড়বে।
এমনভাবে এদের গড়ে তুলুন যেন এরা একসময় মন থেকে বলতে পারে যে, "এই পৃথিবীতে জন্ম দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ তোমাদের মা-বাবা।" আল্লাহ্ এর পরই যেন এরা বাবা-মা কে মন থেকে ধন্যবাদ জানাতে পারে এই দুনিয়াতে আসতে পেরে।
- আজহারুল ইসলাম অর্থী